Headlines
Published On:Monday 8 December 2014
Posted by Unknown

শ্রীমৎ শাসনপ্রিয় মহাথের : এক অনন্য ভিক্ষু ব্যক্তিত্ব



লিখেছেন:-ভিক্ষু ধর্মালংকার,কানাডা


 বিদর্শন আচার্য শ্রীমৎ শাসনপ্রিয় মহাথের বর্তমান সময়ে বিদর্শন প্রেমী মানুষের কাছে একটি সুপরিচিত নাম। ১৯৯৭সালে পোমরা জ্ঞানাংকুর ভাবনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা পূর্বক মুক্তিকামী মানুষের মাঝে বিদর্শন শিক্ষা দিয়ে চলেছেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে গমন পূর্বক মানুষকে বুদ্ধের মূল শিক্ষা বিদর্শনের প্রতি মনোনিবেশ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন।
জন্ম ও কর্মঃ

১৯৬২ সালের ৩ মে রাউজান থানার অংকুরঘোনা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ৭ ছেলে ২ মেয়ের গর্বিত পিতা শশাঙ্ক মোহন ও মাতা খুকিবালা বড়ুয়ার ৮ম তম সন্তান। ১৯৭৮ সালে প্রব্রজ্যা এবং ১৯৮২ সালে অষ্টম সঙ্ঘরাজ সাহিত্যরত্ন ভদন্ত শীলালঙ্কার মহাথেরর উপাধ্যায়ত্বে উপসম্পদা লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে পোমরা জ্ঞানাংকুর মৈত্রী বিহারে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান পূর্বক অধ্যাবধি উক্ত পদে সমাসীন থেকে ধর্ম সমাজ ও মানুষের কল্যাণে নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন। সকাল-সন্ধ্যা সমবেত বন্দনা ও ভাবনা, সকল ছেলে মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষা দান, ছেলে মেয়েদের খেলা ধুলায় উৎসাহিত করা, বাংলাদেশ সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পোমরা জ্ঞানাংকুর পালি কলেজ প্রতিষ্ঠা (তৎকালীন জেলা শিক্ষা অফিসার তরনীসেন বড়ুয়ার ঐকান্তিক সহযোগিতায়) এবং বোর্ড আয়োজিত আদ্য, মধ্য ও উপাধি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করার জন্য ছেলে মেয়েদের উদ্বুদ্ধ করা, গরীব দুঃখী মানুষকে সহযোগিতা করা ও সামাজিক বিভিন্ন কাজে নিঃস্বার্থ ভাবে যোগদান এক অনন্য উদাহরণ। মানব কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ শাসনপ্রিয় মহাথের ২০০৮ সালে পোমরা জ্ঞানাংকুর মৈত্রী বিহারকে নান্দনিক রূপে রূপায়িত করে অমর কীর্তি স্থাপন করেন। ২০০৯ সালে শশাঙ্ক মোহন-খুকিবালা দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা, ২০১০ সালে শশাঙ্ক মোহন-খুকিবালা মেধা বৃত্তি প্রকল্প এবং বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ বিদর্শন ধ্যান কেন্দ্র অত্তদীপ ইন্টারন্যাশনাল মেডিটেশান সেন্টার প্রতিষ্ঠা তাঁকে অমরত্বের আসনে সমাসীন করেছে।


ত্যাগই সুখঃ

বুদ্ধির সুচনা থেকে তাঁর সান্নিধ্যে থাকার সুবাদে গভীর ভাবে তাকে জানার সুযোগ হয়েছে। দানীয় সামগ্রী কোনদিন বিক্রি করতে বা বাড়িতে পাঠাতে দেখা যায়নি। বিহার উন্নয়ন, দান প্রদান ও বিহারের প্রয়োজনে তা ব্যাবহার হতো এবং হয় সেই থেকে আজ পর্যন্ত। এছাড়া ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা, আগুনে ও ভুমিকম্পে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাদেরকে অর্থ সহ সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা তাঁর নিত্য কর্মের একটি। ২০০৯ সাল থেকে প্রতি সপ্তাহে ২ জন ডাক্তারের মাধ্যমে সকল কমিউনিটির গরিব দুঃখী মানুষকে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ করে চলেছেন এক্ষেত্রে যা আমাদেরকে ত্যাগের শিক্ষা দেয় তা বিরল। কোন শ্রদ্ধাবান দায়ক সঙ্ঘদানের জন্য ফাং করলে শ্রদ্ধেয় ভান্তের আবেদন থাকে যেন, যে পরিমাণ অর্থের দানীয় সামগ্রী দেওয়া হবে তার পরিবর্তে গরীব দুঃখী মানুষের জন্য ঔষধ দিলে ভাল হবে। কি রকম ত্যাগ চেতনা থাকলে নিজের লাভ সৎকার বাদ দিয়ে অপরের জন্য চিন্তা করতে পারে সচেতন পাঠক চিন্তা করবেন আশাকরি।


মহাপুরুষদের যথাযত মূল্যায়ন ও আমরাঃ

আমাদের সমাজে এরকম আরো অনেক মহাপুরুষ জন্মেছিলেন অথচ কেন জানি তাঁদের প্রতি আমাদের উদাসীন ভাব। যারা না হলে আমরা আজ এই পর্যন্ত আসা তো দুরের কথা চিন্তা করাও দুঃসাধ্য ছিল। বার্মায় দেখলাম আমাদের সমাজের আলোক বর্তিকা, যার হাতে ত্রিপিটক বাংলায় রচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, বৌদ্ধ মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পরম পূজ্য অগ্রমহাপণ্ডিত প্রজ্ঞালোক মহাথেরর শুধু মাত্র একটি মূর্তি বানিয়ে রেখে সব অবদানের পুরষ্কার দিয়ে দায়িত্ব শেষ হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। এভাবে আরও যারা ছিলেন আমরা তাঁদের জন্য একটি মূর্তি বা স্মৃতি মন্দির করেই দায়িত্ব শেষ করেছি। মূলত তাঁদের জীবন ও কর্ম কালে কালে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্ম কে উদ্বুদ্ধ করা দরকার। পাশাপাশি বর্তমান যারা আছেন তাদেরকে যথাযত মূল্যায়ন করলে আমাদের সমাজ মহাপুরুষ শূন্য হবে না আশাকরি।

সবাই প্রজ্ঞাবান হউক

About the Author

Posted by Unknown on 20:47. Filed under , . You can follow any responses to this entry through the RSS 2.0. Feel free to leave a response

By Unknown on 20:47. Filed under , . Follow any responses to the RSS 2.0. Leave a response

0 comments for "শ্রীমৎ শাসনপ্রিয় মহাথের : এক অনন্য ভিক্ষু ব্যক্তিত্ব"

Leave a reply

Write here you comment

Most Popular Posts

E Paper for Buddhist News and Articles